• শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:২৯ পূর্বাহ্ন

ছাদ বাগানেই হাজারো বনসাই

Reporter Name / ৩১৭ Time View
Update : শুক্রবার, ৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২১

আরবিসি ডেস্ক: ব্যস্ত দন্ত চিকিৎসক হয়েও নারায়ণগঞ্জে ছাদ বাগানে গড়ে তুলেছেন নানা বিরল প্রজাতিসহ হাজারো গাছের বনসাই বাগান।

সিদ্ধিরগঞ্জের নিমাইকাসারীতে পাঁচতলা বাড়ির ছাদে এ বাগান গড়েছেন ডা. মাহফুজা আক্তার এলিজা। তার স্বামীও একজন চিকিৎসক।

বছর ছয়েক আগে ২০১৫ সালের দিকে শখের বসে বাড়ির দোতলার বারান্দায় কয়েকটা ক্যাকটাস ও দু’টি বনসাই কিনে এনে পরিচর্যা শুরু করেন তিনি। সেই থেকে শুরু। ধীরে ধীরে গাছের প্রতি ভালোবাসা জন্মায়। পরে তাদের বাড়িতে ছাদে শুরু করেন বাগান।

তার এই ছাদ বাগানে দেড় শতাধিক দেশি-বিদেশি প্রজাতির পাঁচশ’র বেশি বনসাই রয়েছে। এছাড়া প্রি-বনসাই আছে এক হাজারের বেশি; এগুলো এক বছরের মধ্যে বনসাই হবে বলেন তিনি।

মাটির পরিবর্তে নারকেলের ছোবা আর ইটের গুড়ো ব্যবহার করছেন তিনি। এতে পানি জমে গাছের গোড়া পচে যাওয়ার ভয় থাকে না বললেন এলিজা।

দেশের বিভিন্ন নার্সারি থেকে গাছ সংগ্রহ করা ছাড়াও ভারত থেকেও কিছু গাছ নার্সারির মাধ্যমে আনিয়েছেন তিনি।

তিনি বলেন, অনেকে বাড়ি নির্মাণ করার সময় অনেক গাছ কেটে ফেলেন। ওইসব গাছ সংগ্রহ করে এনে বনসাই বানান তিনি।

বাগান দেখতে দর্শনার্থীরা আসেন জানিয়ে এলিজা বলেন, তার বাগানে ২০ প্রজাতির বট গাছ, প্রায় ৪০ রঙের বিদেশি এডেনিয়ামর, বিভিন্ন প্রজাতির পাইন, জাকারান্ডা, ব্রাশচেরি, ফুকেনটি,পুডুকার্পাস ইত্যাদি রয়েছে। রয়েছে দেশি বিলুপ্ত প্রজাতির ছাতিম, হিজল, তমাল, অশোক, দুর্লভ নাগলিঙ্গম, আফ্রিকান বাউবব।

এছাড়া বিভিন্ন প্রজাতির ক্যাকটাস, সাকুলেন্ট, ইউফোরবিয়া, অর্কিড, পাম ও বাঁশসহ ওষুধি গাছ, দেশি আম, জাম, লিচু, তেঁতুল, নারকেল, লেবু, বিলম্ব, আতা, আমড়াসহ বিভিন্ন প্রজাতির ফলের গাছ রয়েছে।

ফুলের মধ্যে বাগান বিলাস, রঙ্গন, জুঁই, রক্ত জবা, কামিনী, করবী, জুঁই, টগর, কাঠমালতী, ক্যামোলিয়া, জবা ইত্যাদি। এছাড়া বিভিন্ন প্রজাতির ক্যাকটাস, সাকুলেন্ট, ইউফোরবিয়া, অর্কিড, পাম ও বাঁশসহ ওষুধি বনসাই গাছ রয়েছে।

বৃক্ষ প্রেমী এই নারীর ছাদ বাগানে সহায়তা করেন তার স্বামী ডা. ফয়েজ আহমেদ চৌধুরী এবং শ্বশুর সাবেক কৃষি কর্মকর্তা আবুল বাসারও।

এলিজার গাছের প্রতি প্রচণ্ড আগ্রহের কারণে স্ত্রীর পাশে ফয়েজ দাঁড়িয়েছেন তিনি।

বনসাই করতে হলে প্রচুর ধৈর্য্য ও সময়ের প্রয়োজন হয় উল্লেখ করে ডা. ফয়েজ বলেন, “বড় প্রজাতির গাছকে ছোট আকৃতিতে আনতে কমপক্ষে দুই থেকে ৫ বছর সময় লেগে যায়। গাছের ডাল-পালা কেটে রাখা, পরিবর্তন, সেপিং এবং প্রচুর জৈব সার ব্যবহার করতে হয়। ফাঙ্গাল দেখা দিলে ওষুধ ব্যবহার করতে হয়।”

আর ছেলের বউয়ের গাছের প্রীতিতে মুগ্ধ শ্বশুর আবুল বাসার। সাবেক এ কৃষি কর্মকর্তা গাছের পরিচর্যায় নানান পরামর্শ ও উৎসাহ থাকেন তিনি।

এছাড়া অবসর সময়ে ছাদ বাগানের গাছগুলো দেখে আনন্দ পান তিনি। যে কেউ চাইলে তাদের বাড়ির ছাদে বাগান করতে পারেন। এ ছাদ বাগান থেকে বিভিন্ন স্থান থেকে দর্শনার্থীরা আসেন।

কেউ ছাদ বাগান করার বিষয়ে পরামর্শ চাইলে সহযোগিতাও করেন নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার সাবেক কৃষি কর্মকর্তা আবুল বাসার।

বনসাই ছাদ বাগান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাড়ির ১৮শ’ বর্গফুট ছাদে চিকিৎসক এলিজার বনসাই বাগান দৃষ্টান্ত রাখার মতো উদ্যোগ।

তার ছাদ বাগানে বিলুপ্তসহ দুইশ’ প্রজাতির দেড় হাজারের বেশি বনসাই গাছ রয়েছে। তাদের ছাগ বাগান দেখলে যে কারো ক্যাকটাস ও বনসাইয়ের প্রতি আগ্রহ জন্মাবে।

“আমাদের জীব বৈচিত্রে সংরক্ষণে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এটি একটি অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত।”

এলিজার ছাদ বাগানে উপজেলা কৃষি অফিস থেকে নিয়মিত পরামর্শ ও সহযোগিতা করা হয় বলেও জানান তিনি।

আরবিসি/ ০৫ ফেব্রুয়ারি / রোজি


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category