• রবিবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:৫৬ পূর্বাহ্ন

পুকুর খননের মহোৎসব, অভিযোগ করেও সুফল পাচ্ছেন না কৃষক

Reporter Name / ২৪৯ Time View
Update : শনিবার, ৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২১

স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার নিমপাড়া ইউনিয়নের মাঠ জুড়ে চাষ হয়েছে গম, মশুর, পেঁয়াজ, রসুনসহ বিভিন্ন ফসল। চোখ মেললে সেখানে সবুজের সমারোহে মনটা ভরে উঠে। কিন্তু সেই সবুজের বুক চিড়ে খনন করা হচ্ছে অবৈধ ভাবে একের পর এক পুকুর। যেনো দেখার কেউ নেই। এলাকাবাসী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেও কোন সুফল পাচ্ছে না এলাকাবাসী বলে অভিযোগ করেন স্থানীয়রা। এতে প্রভাবশালী পুকুর খননকারীদের কাছে অসহায় হয়ে পড়েছে নিমপাড়া ইউনিয়নের কৃষকরা।

এভাবে একের পর এক পুকুর খনন চলতে থাকায় জলাবদ্ধতার কারণে পুকুরের আশেপাশের জমিগুলো জলাবদ্ধতায় অনাবাদী হয়ে পড়ছে।

সরেজমিন নিমপাড়া ইউনিয়নের বিভিন্ন ফসলী মাঠে গিয়ে দেখা যায়, তিন ফসলী জমিতে এসকেভেটর দিয়ে রিতিমত পুকুর খননের মহোৎসবে মেতে উঠেছে প্রভাবশালী কয়েকটি সিন্ডিকেট। কেউ নিজের জমিতে, আবার কেউ অন্যের জমি লীজ নিয়ে পুকুর খনন করছেন। আর সেই পুকুরের মাটি বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন ইট ভাটায়। দিন রাত সমানতালে এভাবে একের পর এক অবৈধ পুকুর খনন অব্যাহত খথাকলেও স্থানীয় প্রশাসন রয়েছেন অনেকটা উদাসিন। এতে অবেধ পুকুর খননকারীরা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নিমপাড়া ইউনিয়নের একাধিক ব্যাক্তি এ প্রতিবেদককে জানান, দীর্ঘদিন ধরে নিমপাড়া ইউনিয়নের বিভিন্ন মাঠ জুড়ে কয়েকটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের সদস্যরা একের পর এক অবৈধ ভাবে পুকুর খনন করলেও কার্য্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি কখনও। ফলে তারা অনেকটা বাধাহিন ভাবে পুকুর খনন করে চলেছেন। স্থানীয় প্রশাসন ছাড়াও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান কেউ এগিয়ে আসেনি অবেধ পুকুর খনন বন্ধে। এতে পুরো ইউনিয়নের মাঠ এখন পুকুর আর পুকুর।

এছাড়াও বর্ষা মৌসুমে পুকুরের আশে পাশে থাকে তিন ফসলী চজমিতে জ্বলাবদ্ধতার কারনে সেই সব জমিও আজ অনাবাদি হয়ে পড়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা আতাউর রহমান বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ইউনিয়নের বালাদিয়াড়, ভাটপাড়াসহ একাধিক মাঠ জুড়ে অবৈধ ভাবে খনন করা হচ্ছে পুকুর। এতে যেমন ফসলী জমি কমে যাচ্ছে, তেমনি দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা। এভাবে অবেধ ভাবে পুকুর খনন বন্ধে এলাকাবাসী স্থানীয় প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ করেও কার্য্যকর কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে না। এতে চরম বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন পুকুর খননকারীরা।

তিনি জানান, রতন আলী নামের এক ব্যাক্তি মুনসুর আলী নামের অপর এক ব্যাক্তির প্রায় ৮ বিঘা জমি লিজ নিয়ে চলছে পুকুর খনন করছেন। তার পাশেই ভাটপাড়া বিলে পাপুল,স্বপন, আতিকুর রহমান নামের একাধিক ব্যাক্তি অবৈধ ভাবে পুকুর খনন করে চলছেন।
ঝাউবনা বিলে অবৈধ পুকুর খননের বিষয়ে জানতে চাইলে পুকুর খননকারী রতন আলী বলেন, সবখানেই তো পুকুর খনন চলছে, শুধু আমার ক্ষেত্রেই বাধা। জমির শ্রেণি পরিবর্তন করতে হলে ভুমি মন্ত্রনালয়ের অনুমতি প্রয়োজন হয়। আপনি কি সেই অনুমতি নিয়েছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এত কথা বলতে পারছি না।

বিষয়টি সম্পর্কে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লুৎফুন নাহার জানান, অপরিকল্পিত ভাবে পুকুর খননের কারণে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হলে চরম ভাবে কৃষি জমির উপর প্রভাব পড়বে। এতে কৃষি জমি সংকটে পড়বে। ফসল উৎপাদন কমে যাবে, সেজন্য দ্রুত প্রতিকার প্রয়োজন।
সার্বিক বিষয়ে চারঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার সৈয়দা সামিরা বলেন, ফসলি জমিতে পুকুর খনন করে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি সম্পুর্ণরুপে বেআইনী। আর এই বেআইনী কাজের সঙ্গে যারাই জড়িত থাকবেন তাদের দ্রুত সময়ের মধ্যে অভিযান চালিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আরবিসি/ ০৬ ফেব্রুয়ারি/ রোজি


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category