আরবিসি ডেস্ক : কুষ্টিয়ায় মালবাহী ট্রেনের সঙ্গে রেলওয়ে ট্রলির মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে রেলওয়ের পার্মানেন্ট ওয়ে ইন্সপেক্টর (পিডিবিআই) সাইফুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এদিকে, সংঘর্ষের ঘটনার কারণ খুঁজে বের করতে ইতোমধ্যে দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
শুক্রবার (৬ মার্চ) রাতে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় ব্যবস্থাপক (ডিআরএম) মোহাম্মদ শাহীদুল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
একটি তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে পাকশী বিভাগীয় যান্ত্রিক প্রকৌশলী (লোকো) আশীষ কুমার মণ্ডলকে। কমিটির অন্য চার সদস্য হচ্ছেন- পাকশী বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা (ডিটিও) মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন, পাকশী বিভাগীয় প্রকৌশলী বীরবল মণ্ডল,পাকশী বিভাগীয় সংকেত ও টেলিযোগাযোগ প্রকৌশলী এস এম রাজিব বিল্লাহ এবং পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর কমান্ডেন্ট রেজওয়ান উর রহমান।
কমিটিকে আগামী ২৪ ঘণ্টার (শনিবার) মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দেয়া নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
কুষ্টিয়া রেল স্টেশনের স্টেশন মাস্টার এম এ জামানের অভিযোগ, বারবার বলার পরও শ্রমিকরা রেললাইন থেকে ট্রলি সরিয়ে না নেয়ায় কুষ্টিয়া রেলস্টেশন সংলগ্ন মিলপাড়া এলাকায় ট্রেনের পাঁচটি বগি লাইনচ্যুত হয়।
দুর্ঘটনার পর ঘটনাস্থলে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের কাজ করা স্টেশনে কর্মরত এক কর্মচারী (লাইনম্যান) মো. ইব্রাহীম বলেন, ট্রলির শ্রমিকদের বারবার ট্রলি সরিয়ে নিতে বলা হয়েছিল। কিন্তু ট্রলির শ্রমিকেরা ট্রলি না সরিয়ে নিয়ে উল্টো লাল নিশানা দিয়ে ট্রেন থামানোর জন্য বলেন। কিন্তু ততক্ষণে ট্রেন ঢুকে পড়ায় দুর্ঘটনা ঘটে যায়।
পাকশী রেল বিভাগের বিভাগীয় প্রকৌশলী-১ বীরবল মণ্ডল বলেন, ট্রেন দুর্ঘটনায় পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামীকাল শনিবার তারা সরেজমিনে ঘটনাস্থলে পৌঁছে তদন্ত শুরু করবেন। রেলওয়ের নিয়মানুযায়ী অন দ্যা স্পট তদন্ত রিপোর্ট নেয়া হবে। এদিকে এ দুর্ঘটনার পর থেকে কুষ্টিয়া-রাজবাড়ী ও রাজশাহী-টুঙ্গিপাড়া রেলপথে পাঁচটি ট্রেনের চলাচল বন্ধ রয়েছে।
শুক্রবার বিকেল ৫টায় ঈশ্বরদী থেকে উদ্ধারকারী ট্রেন এসে লাইনচ্যুত বগিগুলো উদ্ধারের কাজ শুরু করেছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, শনিবার বিকেল নাগাদ এই রুটে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হতে পারে। শুক্রবার দুপুর আড়াইটার দিকে কুষ্টিয়া-রাজবাড়ী রেলপথে কুষ্টিয়া স্টেশন সংলগ্ন মিলপাড়া এলাকায় মালবাহী ট্রেনের সঙ্গে রেলওয়ে ট্রলির মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে কেউ হতাহত হয়নি। তবে মালবাহী ট্রেনের মাঝের পাঁচটি বগি লাইনচ্যুত হয়ে পড়েছে। মালবাহী ট্রেনটিতে ২২টি বগিই গমবোঝাই ছিল। এটি চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুর থেকে ফরিদপুরে যাচ্ছিল।
ট্রেনের চালক মোস্তাফিজুর রহমান জানান, কুষ্টিয়া স্টেশন থেকে ক্লিয়ারিং সিগন্যাল পাওয়ার পর তিনি ট্রেনটি নিয়ে কুমারখালীর দিকে যাচ্ছিলেন। ২শ গজ এগোনোর পর মিলপাড়া মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের সামনে এসে তিনি দেখতে পান রেললাইনের ওপরে রেলের একটি ট্রলি দাঁড়ানো আছে। কিন্তু ট্রেন থেকে ট্রলিটির আনুমানিক দূরত্ব ৫০ গজের মতো হওয়ায় ব্রেক কষেও সময়মতো ট্রেন থামানো সম্ভব হয়নি।
আরবিসি/০৬ মার্চ/ রোজি